নারীদের ঋতুস্রাব স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং এরফলে প্রজনন ক্ষমতা হারানোর নামই মেনোপজ । এটি সাধারণত ৪৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সের মধ্যে ঘটে, তবে কিছু নারীর ক্ষেত্রে এটি তাড়াতাড়ি বা দেরিতে হতে পারে। যদি কোনো নারীর মেনোপজ ৪০ বছর বয়সের আগেই ঘটে, তবে তাকে প্রিম্যাচিউর মেনোপজ বলা হয়। অটোইমিউন রোগ, চিকিৎসাগত কারণ (যেমন, কেমোথেরাপি বা রেডিয়েশন), অথবা সার্জারি (যেমন, ওভারির অপসারণ), জেনেটিক ফ্যাক্টর এর ফলেও প্রিম্যাচিউর মেনোপজ হতে পারে। যদি কোনো নারীর মেনোপজ ৫৫ বছর বয়সের পরেও না ঘটে, তবে তাকে লেট মেনোপজ বলা হয়। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত ব্যায়াম ও জেনেটিক ফ্যাক্টর এর কারনেও লেট মেনোপজ হতে পারে। যা খুবই ভালো। মেনোপজের সময় নারীদের শরীরে ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরনের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়, যা বিভিন্ন শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তনের কারণ হতে পারে। “মেনোপজের কারণে ইস্ট্রোজেন হরমোন কমে গেলে সবচেয়ে প্রথমে যেটা ঘটে সেটা হল হটফ্লাস। দিনের মধ্যে কয়েকবার হঠাৎ করে খুব গরম লাগে। মুখ লাল হয়ে যায়, ঘেমে যায়। এছাড়া অনেক কিছু ভুলে যাওয়া, খুব ছোটখাটো বিষয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে কেঁদে ফেলা। যোনিপথ শুকিয়ে যায়, জ্বালা-পোড়া হয়। আর ইস্ট্রোজেন না থাকার আর একটা দীর্ঘমেয়াদি এফেক্ট হল অস্টিওপোরোসিস।”মেনোপজ পরবর্তী সবচেয়ে জটিল সমস্যাগুলোর একটি হল অস্টিওপোরোসিস । এটি হাড়ের ক্ষয়জনিত একটি রোগ। মেনোপজ পরবর্তী সময়ে নারীরা অস্টিওপোরোসিসের বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। কারন ইস্ট্রোজেন হরমোনের ঘাটতির কারনে হাড়ের ঘনত্ব দ্রুত কমে যায়। এর কোন উপসর্গ থাকে না কিন্তু খুব অল্পতেই হাড় ভেঙে যেতে পারে। নারীর শরীরে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম এবং কায়িক পরিশ্রমের অভ্যাস না থাকলে মেনোপজ পরবর্তী সময়ে অস্টিওপোরোসিস জটিল আকার ধারণ করতে পারে। পশ্চিমা বিশ্বে মেনোপজ নারীদের জন্য অনেক বড় ইস্যু। কারন “তাদের কাছে যৌনতা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যৌনতা না থাকলে তারা তাদের জীবনের উপভোগ এবং উদ্যমতা হারিয়ে ফেলেন। তাই তারা সেখানে হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি করে এবং আরো অনেক কিছু করেন যৌনতা টিকিয়ে রাখার জন্য । তাই অল্প বয়স থেকেই কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করে মেনোপজ বিলম্বিত করা যেতে পারে এবং মেনোপজের পরেও যৌন আকাঙ্ক্ষা বজায় রাখা যেতে পারে। নিচে বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং সুপারিশ দেওয়া হলো: মেনোপজ ঠেকানোর জন্য পদক্ষেপ: স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: ক) সয়া, টফু, চিয়া সিড ও ফ্ল্যাক্স সিডে প্রচুর পরিমাণে ফাইটোইস্ট্রোজেন থাকে, যা ইস্ট্রোজেনের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে। খ) আখরোট, আলমন্ড, চিয়া সিড, ফ্ল্যাক্সসিড, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেগুলি যৌন স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়ক। স্বাস্থকর ফ্যাট যেমন অলিভ ওয়েল দিয়ে সালাদ, বীট, রসুন, খাটি ঘী, ডিম, দই, ছানা , পনির, পালং শাক ইত্যদি নিয়মিত খেতে হবে। গ) অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার যেমন গ্রিন টি, ব্রোকোলি, পালং শাক ও অন্যান্য শাকসবজি গ্রহণ করা উচিত। ঘ) ভিটামিন ডি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান যা শরীরের বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন ডি না থাকলে শরীর ক্যালসিয়াম শোষণ করতে পারেনা, পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখে, ভিটামিন ডি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ভিটামিন ডি এর অভাবে ডিপ্রেশন দেখা দেয়, ভিটামিন ডি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক, পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি গ্রহণ হৃদপিণ্ড এবং রক্তনালীর কার্যক্রম সঠিক রাখতে সহায়ক, ভিটামিন ডি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়িয়ে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক এবং ভিটামিন ডি ত্বকের কোষের উন্নতি করে ও ক্ষত সারাতে সহায়ক। ভিটামিন ডি এর প্রধান উৎস সূর্যের আলো। নিয়মিত উন্মুক্ত শরীরে সূর্যালোক গ্রহণ শরীরে ভিটামিন ডি উৎপাদনে সহায়ক। তৈলাক্ত মাছ ,ডিমের কুসুম, লিভার খেলেও সামান্য ভিটামিন ডি উতপাদন হয় এছাড়াও ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহন করা যেতে পারে এবং ক্যালসিয়ামের জন্য কাঠ বাদাম, দই, পনির খেতে হবে নিয়মিত। নিয়মিত ব্যায়াম: ক) কার্ডিও ও স্ট্রেংথ ট্রেনিং: দৌড়ানো , সাঁতার কাটা, দ্রুত হাঁটা এসব কার্ডিও ব্যায়াম রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে , হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় , রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমায়, মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং মুড উন্নত করে এবং হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে। ওয়েট লিফটিং (Weight Lifting), পুশ-আপস (Push-ups), স্কোয়াট (Squats), লাঞ্জেস (Lunges) এসব স্ট্রেংথ ট্রেনিং পেশির ভর ও শক্তি বৃদ্ধি করে, হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে এবং অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি কমায়, খ) মেডিটেশন ও ডিপ ব্রিদিং: মানসিক চাপ কমাতে এবং মুড উন্নত করতে সাহায্য করে। গ) সুগার ও ওজন নিয়ন্ত্রণ: অতিরিক্ত ওজন মেনোপজ ত্বরান্বিত করতে পারে। তাই স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। যেভাবেই হোক রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রন করতে হবে এবং স্বাস্থকর খাবার গ্রহন ও ব্যায়ামের মাধ্যমে ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত থাকার সর্বোচ্চ চেস্টা করতে হবে। পর্যাপ্ত ঘুম: পর্যাপ্ত এবং নিয়মিত ঘুম শরীর ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ , প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম শরীরের হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে ঘুমানো উচিত এবং অবশ্যই ভোর রাতে অর্থাৎ ৪:৩০টার মধ্যে ঘুম থেকে উঠে যাওয়া উচিত। শরীর সুস্থ রাখতে পর্যাপ্ত ডীপ ঘুমের কোন বিকল্প নেই। মেনোপজ পরবর্তী যৌন আকাঙ্ক্ষা তীব্র করার জন্য পদক্ষেপ: মেনোপজ পরবর্তী সময়েও পূর্বের মত স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ভিটামিন , ক্যালসিয়াম ও মিনারেল গ্রহন, নিয়মিত ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত ঘুম ঠিক রাখতে হবে এবং পাশাপাশি নিম্নোক্ত ব্যবস্থাগুলিও গ্রহন করতে হবে। হরমোন থেরাপি: এস্ট্রোজেন থেরাপি, টেস্টোস্টেরন থেরাপি (যদি প্রয়োজন হয়) যৌন আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি করতে সহায়ক হতে পারে। একজন চিকিৎসকের পরামর্শে হরমোন থেরাপি গ্রহণ করা উচিত। PT-141 ইনজেকশনঃ মেনোপজের পরে অনেক নারীর যৌন আকাঙ্ক্ষা কমে যেতে পারে। PT-141 এই সমস্যা সমাধানে সহায়ক হতে পারে। এটি মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটারগুলিকে প্রভাবিত করে, যা যৌন আকাঙ্ক্ষা পুনরুদ্ধারে সহায়ক।T-141 একটি নন-হরমোনাল ওষুধ, যা হরমোনাল থেরাপির মতো সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি করে না। এটি মেনোপজ পরবর্তী মহিলাদের জন্য একটি ভালো বিকল্প হতে পারে। তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শক্রমে গ্রহন করা যেতে পারে। উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য খাবারঃ ডার্ক চকলেটে ফ্ল্যাভোনয়েড থাকে, যা রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং এন্ডোরফিন নিঃসরণ করে। এটি মুড উন্নত করতে সহায়ক। সেক্সের পূর্বে এক-দুই টুকরা ডার্ক চকলেট খেতে পারেন। বাদাম ও বীজে জিঙ্ক থাকে, যা টেস্টোস্টেরন লেভেল বাড়ায় এবং যৌন আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি করে, মাঝে মাঝে গরুর মাংস খাওয়া যেতে পারে জিংক বাড়ানোর জন্য। ডিমে ভিটামিন বি৬ এবং বি৫ থাকে, যা যৌন হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং স্ট্রেস কমায়। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে, যা যৌন উত্তেজনা এবং শক্তি বজায় রাখতে সহায়ক। সেক্সের আগে পর্যাপ্ত পানি পান করুন। গ্রিন টিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং মুড উন্নত করতে সাহায্য করে। ম্যাকা রুট, গিঙ্কো বিলোবা, এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক সাপ্লিমেন্ট যৌন উত্তেজনা বাড়াতে খাওয়া যেতে পারে। অন্যান্য করনীয়ঃ নিয়মিত যোগ ব্যায়াম রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি করতে সহায়ক। সঙ্গীর সঙ্গে মানসিক সংযোগ বজায় রাখা এবং রোমান্টিক কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করা। যৌন আকাঙ্ক্ষা বাড়াতে সঙ্গীর সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করা। যৌন উত্তেজনা এবং আকাঙ্ক্ষা বাড়ানোর জন্য লুব্রিকেন্ট এবং ভাইব্রেটর ব্যবহার করা যেতে পারে যদি ইসলাম ধর্মে অনুমতি থাকে । সর্বোপরি মেনোপজ ঠেকানোর জন্য এবং মেনোপজ পরবর্তী যৌন আকাঙ্ক্ষা বজায় রাখতে স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি মহিলার শরীর ভিন্ন, তাই ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যের প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। চিকিৎসকের পরামর্শ এবং নির্দেশনা মেনে চলা সর্বোত্তম।
read moreযৌন উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ যৌনাঙ্গে পর্যাপ্ত রক্ত সঞ্চালন না হলে যৌন উত্তেজনা কমে যেতে পারে। রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধির জন্য Nitric Oxide অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কারণ এটি রক্তনালী প্রসারিত করে এবং রক্ত প্রবাহ বাড়ায়। ফলে, ব্লাড প্রেসার কমে এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে পর্যাপ্ত রক্ত পৌঁছায়। নিচে Nitric Oxide বাড়ানোর এবং যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধির কিছু উপায় নিয়ে আলোচনা করা হলো: ***Nitric Oxide বাড়াতে করনীয়ঃ ১. প্রতিদিন সকালের হাঁটা: প্রতিদিন ফজরের নামাজ আদায়ের পর খালি পেটে ৪৫-৬০ মিনিট দ্রুত গতিতে হাঁটুন। এটি শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং শরীরে Nitric Oxide উৎপাদন বাড়ায়, যা রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধিতে সহায়ক। ২. শ্বাস-প্রশ্বাসের নিয়ম: মুখ দিয়ে শ্বাস না নিয়ে অবশ্যই নাক দিয়ে শ্বাস নিন। নাক দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস Nitric Oxide এর উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে। ৩. খাবারের গুরুত্ব: Nitric Oxide বাড়ায় এমন কিছু খাবার হলো: বীট, রসুন, পালং শাক, বেদানা, ১০০% ডার্ক চকোলেট। এড়িয়ে চলুন: চিনি ,অ্যালকোহল, লবন ও ধুমপান। ভালো ঘুমের গুরুত্ব: পর্যাপ্ত ও ভালো ঘুম Nitric Oxide উৎপাদনকে বাড়ায়। ***Testosterone এর মাত্রা বৃদ্ধিতে করনীয়ঃ ১. শারীরিক অনুশীলন: নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম যেমন হাঁটা এবং ওজন উত্তোলন শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে। ওজন উত্তোলনের ব্যায়াম হাত, থাই এবং বুকের পেশি বাড়িয়ে Testosterone উৎপাদন বাড়ায়, যা যৌন উত্তেজনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২.খাবার: পুরুষ ও মহিলাদের জন্য Testosterone যৌন উত্তেজনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হরমোন। Testosterone বাড়াতে স্বাস্থ্যকর প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ভিটামিন ডি, এবং জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। যেসব খাবার Testosterone বাড়ায়: Eggs, Ginger, Pomegranates, Walnut,Almond, Fatty fish, Extra-virgin olive oil, Coconut oil, Garlic, Vitamin D supplement. মহিলাদের জন্য Estrogen গুরুত্বপূর্ণ: হরমোন ব্যালেন্স ঠিক রাখতে Garlic, Vitamin B Complex, Vitamin D, খেজুর, কাঠ বাদাম ইত্যাদি খাবার মহিলাদের জন্য বিশেষ উপকারী। ৩. মনোসংযোগ এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ: মানসিক চাপ Testosterone কমাতে পারে। মানসিক চাপ কমাতে নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম এবং প্রকৃতির মাঝে সময় কাটানো জরুরী । ***Vitamins: ১. Zinc এর গুরুত্ব: Zinc যৌনাঙ্গে রক্ত প্রবাহ বাড়াতে সমানভাবে সহায়ক। যেসব খাবারে প্রচুর Zinc পাওয়া যায়: গরুর মাংস, কুমড়ার বিচি, ছোলা, গলদা চিংড়ি, ডিম, ডার্ক চকোলেট, পালং শাক, রসুন, তরমুজ, কলা। ২. ভিটামিন ডি: ভিটামিন ডি এর অভাবে পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রচন্ড যৌন অক্ষমতা তৈরি হয় শুধু তাই নয় ভিটামিন ডি এর অভাবে হার্ট অ্যাটাকও হতে পারে এবং আরো একটি বিষয় হল যদি আপনার শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন-ডি না থাকে তাহলে আপনি যত ক্যালসিয়াম খান না কেন কোন ক্যালসিয়াম আপনার শরীরে ঢুকবে না , কারন শরীর ভিটামিন-ডি এর মাধ্যমে ক্যালসিয়াম গ্রহন করে। কাঠ বাদাম, চিজ, দধি এগুলির মধ্যে প্রচুর ক্যালসিয়াম আছে। তাছাড়া শরীরের প্রতিটা বিষয়ে ভিটামিন-ডি এর প্রভাব রয়েছে, ভিটামিন-ডি ছাড়া সুস্থ্য থাকা অসম্ভব । ভিটামিন ডি হল একধরনের হরমোন, উন্মুক্ত শরীরে প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিট রোদ্র লাগালে শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি উৎপন্ন হয় এবং সূর্যের আলোই হল ভিটামিন –ডি এর প্রধান উৎস , তাই রোদ্র লাগাতেই হবে। মুখ-মন্ডলে রোদ্র লাগানো যাবেনা কারন তাতে মুখের ত্বক পুড়ে যাবে, সুর্যের আলো সরাসরি স্ক্রীনে না পড়লে ভিটামিন ডি উৎপন্ন হয় না অর্থাৎ জামাকাপড়ের উপরে রোদ পড়লে সূর্যের আলো কোন উপকারে আসেনা , তাই উন্মুক্ত পিঠে রোদ লাগানো উচিত । যে সব খাবারে ভিটামিন D পাওয়া যায় - মাশরুম (Mushrooms) , Cod Liver Oil , ডিমের কুসুম (Egg yolks) । তাই নিয়মিত রোদে যেতে হবে এবং একই সাথে অবশ্যই প্রত্যেক দিন অর্গানিক vitamin D3 সাপ্লিমেন্ট ও fish oil খেতেই হবে । ৩. L-arginine: একটি গুরুত্বপূর্ণ অ্যামিনো অ্যাসিড, যা রক্ত সঞ্চালন এবং মাসল বৃদ্ধি করে। যেসব খাবারে Arginine পাওয়া যায়: দেশি মুরগী, আখরোট, কুমড়ার বিচি, চীনা বাদাম। ৪. Vitamin E: যৌন উত্তেজনা এবং stamina বাড়াতে সহায়ক। Sunflower seeds, Almonds, Spinach, Peanuts, Olive oil, Broccoli সমৃদ্ধ ভিটামিন ই এর উৎস। ৫. Vitamin B Complex: যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য এবং ছেলেদের ইরেক্টাইল ফাংশন উন্নত করতে বিশেষ উপকারী। Chicken breast, গরুর কলিজা, ডিম, দই, গরুর মাংস থেকে পাওয়া যায়। ***কোলেস্টরল এবং মাসল বিল্ডিং: এই কোলেস্টরল ভিটামিন ডি এবং Testosterone উৎপাদনে সহায়ক। সপ্তাহে তিনদিন ওজন উত্তোলনের ব্যায়াম করার আগে সঠিক পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে। যেমন: ১০০% খাটি খাটি ঘী,কোল্ড প্রেসড কোকোনাট অয়েল, এবং হাফ বয়েল করা তিনটি ডিমের কুসুম। ***নিয়মিত খাদ্যাভ্যাস: শরীর সুস্থ রাখতে এবং যৌন উত্তেজনা বজায় রাখতে রুটি, আলু, বিস্কুট, চানাচুর, মুড়ি , খই ইত্যাদি না খাওয়া ভালো কিন্তু খুব অল্প করে বাদামী চালের ভাত খেতে পারেন। ভালো প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট গ্রহণ করতে হবে। যেমন: দেশি মুরগী, গরুর মাংস, ডিম, টক দই, Olive oil, Coconut oil, বাদাম,প্রচুর শাকসবজি এবং ফলমূল। তবে অবশ্যই চিনিযুক্ত খাবার, বাজে তেল, অতিরিক্ত লবণ এবং ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এছাড়া প্যাকেটজাত খাবার এবং প্লাস্টিকের পাত্রে রাখা খাবারও এড়িয়ে চলা উচিত। নিয়মিত ফুড সাপ্লিমেন্ট: পুরুষ এবং মহিলাদের যৌন উত্তেজনা বাড়াতে কিছু কার্যকরী সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা যেতে পারে। যেমন: Ginseng Root Extract, Organic Maca Root Powder। *** বিশেষ পরামর্শ: কিডনি, লিভার, হার্ট বা অন্যান্য জটিল রোগ থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে জীবনধারা পরিবর্তন করা উচিত।
read moreখাবার নিয়মিত একই সময় খাওয়া উচিত। অবশ্যই বাহিরের খাবার ত্যাগ করতেই হবে এবং তেলে ভাজা খাবার ঘরে তৈরি করেও খাওয়া উচিত না। অবশ্যই প্রসেস করা তেল কিংবা হাই হিটে ফিল্টার করা তেলের পরিবর্তে কোল্ড প্রেসড অলিভ অয়েল অথবা কোল্ড প্রেসড সরিষার তেল খেতেই হবে। এক খাবার দুইবার গরম করে খাবেননা। অর্থাৎ সকালের খাবার সকালেই খেয়ে ফেলুন। গরম পানি হজমে সহায়তা করে, ইনফ্লামেশন কমাতে সহায়তা করে, টেনশন কমায়, তাই খাবার পর কিংবা মাঝে মাঝে আদা দিয়ে গরম পানি পান করুন । Cabbage juice ( বাধা কপির জুস)- গবেষনায় প্রমানিত বাধাকপির জুস খেলে পেটের আলসার জনিত সমস্যাসহ গ্যাস্ট্রিক দূর হয়। বাধা কপির জুস হল best anti-inflammatory food। তাই মাঝে মাঝে এক কাপ ক্যাবেজ জুস খান, তবে একত্রে এক কাপ জুসের বেশী না খাওয়াই ভালো। কোন সার কিংবা কোন প্রকার কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়নি এরকম ক্যাবেজ ভালোভাবে ধুয়ে তারপর জুস বানানো যেতে পারে। এই জুস সবার খাওয়া উচিত। এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে এক চা চামুচ অর্গানিক অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার নিয়মিত খান , এটি গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের চেয়েও কার্যকর সমাধান। মনে রাখবেন এটি খেয়ে শোয়া যাবেনা, বিছানায় শোয়ার মিনিমান দুই ঘন্টা পূর্বে এটি পান করুন। খাবার খাওয়ার ২০ মিনিট পূর্বে খাওয়া যেতে পারে অথবা খাবার খাওয়ার ১ ঘন্টা পরে এটি খাওয়া উচিত -------- এটি অসাধারন একটি ন্যাচারাল ওষুধ । কিন্তু কখনো অতিরিক্ত খেতে যাবেননা। একটানা এক মাস খেয়ে ১৫ দিন বিরতি দিয়ে দিয়ে খাওয়া ভালো। আর একটি কথা- গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকর, তাই সবসময় গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ এড়িয়ে চলুন। ১ চামচ ত্রিফলা ( হারিতকি, বহেরা, এবং আমলকি ) চূর্ণ রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস মিডিয়াম গরম পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়া হয়। এটি হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং পেট পরিষ্কার রাখতে সহায়ক। গ্যাসের সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তি পেতে এটি অনেক ভালো ওষুধ হিসেবে কাজ করে। যদি ত্রিফলা খাওয়ার পরে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়, যেমন পেট ব্যথা হয় তবে ত্রিফলা খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে । আবার কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে সেক্ষেত্রে ত্রিফলা খাওয়া শুরু করলে অবশ্যই বেশি পানি খেতে হবে এবং ইসবগুলের ভুষিও খাওয়া উচিত তবে ইসবগুলের ভুষি সব সময়েই খাওয়া উচিত, যেহেতু রাতে ত্রিফলা খাচ্ছেন , রাতে ইসবগুল না খেয়ে ভোরে ইসুবগুলের ভুষি খান নিয়মিত। ত্রিফলা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং বদহজম দূর করতেও খুব কার্যকরী একটি ওষুধ । এছাড়াও ত্রিফলার গুনের শেষ নাই। ত্রিফলা খেলে সাথে সাথে বন্ধ নাক খুলে যায়, জ্বর জ্বর ভাব থাকলে সেটিও ভালো হয়ে যায় আল্লাহর রহমতে , একটানা ৩০ দিন খেয়ে ৫ দিন বিরতি দিয়ে আবার ৩০ দিন খান, এভাবে খেতে থাকুন ভালো না হওয়া পর্যন্ত। এছাড়া মৌরি হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে এবং পেটে গ্যাস জমতে দেয় না। মৌরি চিবালে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমে। তাই মৌরি সর্বদা একটা কৌটায় নিজের সাথেই রাখুন। ১ দিন পর পর সকালে খালি পেটে কুসুম গরম পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয় এবং পেট পরিষ্কার থাকে। অবশ্যই নিয়মিত ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে যেমন শাকসবজি, ফল, শস্য (whole grains), , এবং বাদাম এগুলি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়ক। ফাইবার মলকে নরম করে এবং পাচনতন্ত্রে দ্রুত গমন করতে সহায়ক হয়। আপনি যতই ওষুধ খান তাতে কোন কাজ হবেনা যতক্ষন পর্যন্ত বাহিরের ভাজ-পোড়া খাবার এবং খারাপ তেলে রান্নাকৃত খাবার পরিহার না করেন, সঠিক সময়ে ঘুমাতে না যান এবং ঘুম থেকে খুব ভোরে না উঠেন এবং সঠিক টাইমে স্বাস্থকর খাবার না খান এবং নিয়মিত যদি ব্যায়াম না করেন। তাই অবশ্য এগুলি নিয়মিত পালন করুন এবং সুন্দর, স্বাস্থ্যকর জীবন গড়ুন।
read more